Header Ads

Header ADS

গ্রাহক হয়রানিতে মহারাজপুর সাব-জোনাল অফিস। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জনজীবন চরমে।- সময়ের বাতিঘর অনলাইন

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলাবাসী। এলাকায় চরম লোডশেডিংয়ে গড়ে ৬/৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। দিনে ২৪ ঘণ্টায় মধ্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় মাত্র ১৭-১৮ ঘণ্টা। এর ফলে এই তীব্র গরমে এলাকার মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। এই ভয়াবহ লোডশেডিং থেকে মুক্তির পথ পেতে গ্রাহকেরা‘বিদ্যুৎ দাও, নইলে জীবন নাও’ প্ল্যাকার্ড লিখে রাস্তায় অভিনব প্রতিবাদ নামার হুশিয়ারি দিচ্ছেন।
অপরদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা অনেকে মনে করছেন, লোডশেডিংয়ে সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে, এতে পল্লী বিদ্যুতের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছেন। ফলে সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা হারাচ্ছেন। লোডশেডিং বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলাবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাইনের টেকনিক্যাল সমস্যা, ওভার লোড ও লো-ভোল্টেজ ছাড়াও রয়েছে ঘন ঘন ট্রিপ ও সোর্স লাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ফলে সহজেই এ লোডশেডিং তৈরী হচ্ছে। এই বর্ষা মৌসুমে আকাশে মেঘ জমতে দেখলেই শুরু হয় লোডশেডিং। সাথে একটু-আধটু বৃষ্টি হলে তো আর কথায় নেই, কয়েক ঘন্টার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকতেই হবে। এটা যেন রুটিনে পরিণত হয়েছে। অনাভিজ্ঞ টেকনিসিয়ান দ্বারা কাজ আর বৈদ্যুতিক লাইনে জোড়াতালির কারণে নেগেটিভ পজেটিভ এক হয়ে প্রায় সময় ট্রান্সমিটার বিষ্ফোরণের মত ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। ফলে কারডিয়াক পেশেন্টের মৃত্যুর ঝুঁকির পাশাপাশি অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের এমন খামখেয়ালিপনার জন্য মানুষ প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। অপর দিকে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগে কোন অভিযোগ দিলে তার কোন সমাধান না করে উল্টো ওই অভিযোগকারীদের নানান রকম হয়রানির মাধ্যমে বিভ্রান্তিতে ফেলারও অভিযোগ রয়েছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা ঠিকভাবে করতে পারছে না। লোডশেডিং থাকার পরও বিল দিতে হচ্ছে অনেক বেশি। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগের উপর টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, সরকারের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে সাধারণ জনগণ। জেলার সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এবং ব্যস্ততম রামচন্দ্রপুরহাট ও মহারাজপুর ঘোড়াস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ীরা ও সাধারণ জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "বিদ্যুৎ এর এরকম অচরণে আমরা হতাশ। তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে গরমে কোন খরিদদার দোকানে বেশিক্ষণ বসতে পারে না। ফলে বেচাকেনাও ঠিকমতো করতে পারছি না। বিশেষ করে কনফেকশনারি দোকানের ফ্রিজের মালামাল নস্ট হয়ে যাচ্ছে।" অতি লোডশেডিংয়ের কারণে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতিও নষ্ট হচ্ছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকলেও মাস শেষে মোটা অংকের বিদ্যুৎ বিল ধরিয়ে দিতে ভুল করেনা বিদ্যুৎ বিভাগ। অভিযোগ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক না থাকলেও বিদ্যুৎ বিল বেড়েই চলেছে। আবার এক মাস অথবা সর্বোচ্চ দু’মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়লেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পিছপা হন না বিদ্যুৎ বিভাগের লাইনম্যানেরা। সম্প্রতি সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ গিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ এর আর দেখা মিলেনি। যা শেষ রাতে এসে কিছুক্ষণ পর আবার চলে যায়, আসে কয়েক ঘন্টা পর। এ যেন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। মহারাজপুর অভিযোগ কেন্দ্রে কোনো গ্রাহক অভিযোগ করতে গেলে সদুত্তর দেওয়াতো দূরের কথা বরং খারাপ ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা। সোমবার এক গ্রাহকের অনিবার্য কারনে কয়েকমাসের জমে থাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে পাঠালে, বিল গ্রহণ করতে বলেন এজিএম শয়ম কৃষ্ণ রায় ।এরপরেও দায়িত্বে থাকা বিলিং সুপারভাইজার রিতা রানী মন্ডল বাহকের সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন এবং ব্যাপক হয়রানি করেন। এবং ক্ষিপ্ত হয়ে মিটার মালিককে বাধ্যতামূলক হাজির হতে বলেন। বিদ্যুতের চলমান বিভ্রাট দ্রুত বন্ধ করা না হলে এবং গ্রাহকদের এভাবে হয়রানি করতে থাকলে তা একসময় চরম অনাস্থায় রুপ নিতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকেরা ইতিমধ্যে প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বারোঘরিয়া, মহারাজপুর, রানিহাটী, বলিয়াডাঙ্গা ও ঝিলিম ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি এলাকার গ্রাহকেরা জোটবদ্ধ হয়ে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ সভা-সমাবেশ করতে পারে বলে জানা গেছে। গ্রাহকদের এই প্রতিবাদ সহিংসতা হয়ে উঠতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে মহারাজপুর সাব-জোনাল অফিসের এজিএম শয়ম কৃষ্ণ রায় মুঠোফোনে জানান, "বিল এলাকার মধ্যে লাইনে ত্রুটি হওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান করা হবে" বিলিং সুপারভাইজারের দূর্ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে "ট্রেনিং এ আছি বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।" জিএম রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, "বিদ্যুৎ গ্রাহক হয়রানির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।" বিলিং সুপারভাইজার রিতা রানী মন্ডলের হয়রানীর বিষয়ে এজিএম ব্যবস্থা নিবে বলেও জানান। গত রাতে বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়ে গোজামিল ছাড়া তেমন কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.